কাপড়ের হিসাব কি | কাপড়ের হিসাব বের করার নিয়ম

By Textile BD.

কাপড়ের হিসাব বলতে কাপড়ের সুতার সংখ্যা, দৈর্ঘ্য, কাউন্ট, ওজন প্রভৃতি বের করাকে বুঝায়। কাপড়ের হিসাব বের করার আগে জানতে হবে কাপড়টি কোন পদ্ধতিতে উইভিং, নিটিং, নন-ওভেন, বিশেষ পদ্ধতিতে কিভাবে কাপড়ের হিসাব বের করা হয় তা আলোচনা করা। তাঁতে কাপড় তৈরির সময় টানা ও পড়েন সুতার বন্ধনী হয়, যার ফলে কাপড়ের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ হ্রাস পায়। 
কাপড়ের হিসেব
কাপড়ের হিসেব

তাছাড়া কাপড় তৈরির সময় টানা ও পড়েন সুতার বন্ধনী হয়, যার ফলে কাপড়ের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ হ্রাস পায়। তাছাড়া বিভিন্ন অবস্থায় কাপড়ের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ বিভিন্ন হয়। কাপড়ের দৈর্ঘ্য প্রস্থের এ পরিবর্তনকে বিভিন্ন নামে অভিহিত করা হয়। যেমনঃ
  • লুম স্ট্রেইট লেংথ
  • রাফ লেংথ
  • ফিনিশড লেংথ 
  • কাট লেংথ
  • টেপ লেংথ
  • রাফ উইডথ
  • ফিনিশিড উইডথ

লুম স্ট্রেইট লেংথ

তাঁতে থাকা অবস্থায় কাপড়ের যে দৈর্ঘ্য পাওয়া যায়, তাকে লুম স্ট্রেইট লেংথ বলে। 

রাফ লেংথ

তাঁত থেকে কাপড় নামানোর পর কাপড়ে কোন টেনশন না থাকায় কাপড়টি দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে কিছুটা সংকুচিত হয়, এ অবস্থায় কাপড়ের টানা বরাবর যে দৈর্ঘ্য পাওয়া যায়, তাকে কাপড়ের রাফ লেংথ বলে। এটি লুম স্ট্রেইট লেংথ হতে কম হয়। 

ফিনিশড লেংথ

কাপড়কে ক্যালেন্ডারিং ও ইস্ত্রি করার পর কাপড়ের যে দৈর্ঘ্য পাওয়া যায়, তাকে কাপড়ের ফিনিশিড লেংথ বলে। এটি রাফ লেংথ হতে বেশি হয়।

কাট লেংথ

ক্রেতার চাহিদা মোতাবেক কাপড়ের থান করার জন্য বা ব্যাগ তৈরির জন্য যে দৈর্ঘ্যে কাপড়কে কাটা হয়, তাকে কাপড়ের কাট লেংথ বলে। 

টেপ লেংথ

কাপড় বুননের সময় টানা ও পড়েন সুতায় বন্ধনী হওয়ায় যে দৈর্ঘ্যের সুতা নেয়া হয় কাপড়ে সে দৈর্ঘ্য পাওয়া যায় না অর্থাৎ কাপড়টি সংকুচিত হয়। 

আর তাই নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের কাপড় পেতে হলে কাপড়ের সংকোচনের কথা মাথায় রেখে যত দৈর্ঘ্যের কাপড় পেতে চাই তার চেয়ে বেশি দৈর্ঘ্যের সুতা নিতে হয় একে টেপ লেংথ বলে।

রাফ উইডথ

তাঁত হতে কাপড় বের করার পর কাপড়ের যে প্রস্থ পাওয়া যায় তাকে রাফ উইটথ বলে।

ফিনিশিড উইডথ

ফিনিশিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর কাপড়ের কাপড়ের যে প্রস্থ পাওয়া যায়, তাই ফিনিশড উইডথ। 

কাপড়ের হিসাব বের করার নিয়ম

সাধারণত কাপড়ের বহর অনেক ধরনের হয়ে থাকে। একেক কাপড়ের একেক ধরনের বহর থাকে। যেমনঃ দুই হাত বহরের হয় আবার (2½) আড়াই হাত বহরের হয়, তিন হাত বহরের হয় ও সর্বোচ্চ (3½) সাড়ে তিন হাত বহরের কাপড় হয়। এছাড়াও বিছানার চাদরের কাপড় ৫ হাত বহরের হয়। তাছাড়া ২ হাত বহরের কাপড় সাধারণত ৩৬ ইঞ্চি থাকার কথা। 

কিন্তু পুরা 36 ইঞ্চি থাকে না যা সাধারণত ৩৪, ৩৩, ৩২, ৩১ ইঞ্চির ভিতরে হয়। দুই হাত বহরের কাপড় দিয়ে সাধারণভাবে জামা বানানোর জন্য কাপড় লাগে আড়াই গজ আবার পায়জামার ২ গজ চার গিরা ও পাঞ্জাবির ২ গজ চার গিরা ও শার্টের আড়াই গজ কাপড় লাগে। 

এছাড়াও (2½) আড়াই হাত বহরের কাপড় সাধারণত পাঁচ্চল্লিশ ইঞ্চি থাকার কথা, কিন্তু 2½ আড়াই হাত বহরের কাপড় থাকে সর্বোচ্ছ ৪৪ থেকে সর্বনিম্ন ৩৯ ইঞ্চির ভিতরে। জামা বানাতে আড়াই হাত বহরের কাপড় লাগে ২ গজ ও পায়জামা ২ গজ এছাড়াও পাঞ্জাবির আড়াই গজ কাপড়ের শার্ট বানাতে ২ গজ কাপড় লাগে।

কাপড়ের হিসাব, বহরের সম্পূর্ণ মাপ ও হিসাব

তিন হাত বহরের কাপড় থাকার কথা 54 ইঞ্চি। কিন্তু থাকে 54 চৌয়ান্ন থেকে 48 ইঞ্চির মধ্যে। সাধারণভাবে 3 হাত বহরের কাপড় দিয়ে জামা বানাতে কাপড় লাগে দেড় গজ। পায়জামা বানাতে দেড় গজ, পাঞ্জাবি বানাতে ২ গজ এবং শার্ট বানাতে দেড় গজ কাপড় লাগে। 

এছাড়াও (3½) সাড়ে তিন হাত বহরের কাপড় সাধারণত হওয়ার কথা তেষট্টি ইঞ্চি। কিন্তু থাকে 62 ইঞ্চি থেকে 58 ইঞ্চির মধ্যে। এছাড়াও সুতি কাপড়গুলো সাধারণত 2 দুই থেকে (2½) আড়াই হাত বহরের হয়। সুতি কাপড় তিন হাত বা সাড়ে তিন হাত বহরের হয় না, তবে খুব কম সংখ্যক কাপড় হয়। 

মাখন জরজেট, সাম্মু সিল্ক, নিলেন এবং বোরকার কাপড়গুলো সাধারণত তিন থেকে (3½) সাড়ে তিন হাত বহরের হয়ে থাকে।

কাপড়ের গজ ও গিরার হিসাব 

১ ফুট = ১২ ইঞ্চি
১ গজ = ৩ ফুট/ ২ হাত
½ গজ = ১৮ ইঞ্চি
১ গজ = ৩৬ ইঞ্চি
২ হাত = ১ গজ
৩৬ ইঞ্চি = ১ গজ
১ হাত = ½ গজ
১ গজ = ১৬ গিরা
১ গিরা = ২ ইঞ্চি ২ সুতা 
২ গিরা = ৪ ইঞ্চি ৪ সুতা
৩ গিরা = ৬ ইঞ্চি ৬ সুতা
৪ গিরা = ৯ ইঞ্চি
৫ গিরা = ১১ ইঞ্চি ২ সুতা
৬ গিরা = ১৩ ইঞ্চি ৪ সুতা
৭ গিরা = ১৫ ইঞ্চি ৬ সুতা
৮ গিরা = ১৮ ইঞ্চি ১ হাত
৯ গিরা = ২০ ইঞ্চি ২ হাত
১০ গিরা = ২২ ইঞ্চি ৪ সুতা
১৬ গিরা = ৩৬ ইঞ্চি ১ গজ

৮ সুতা = ১ ইঞ্চি
১ সুতা = ১/৮
২ সুতা = ১/৪
৩ সুতা = ৩/৮
৪ সুতা = ১/২

২ সুতা = সোয়া
৪ সুতা = সাড়ে
৬ সুতা = পনে


No comments:

Pages