মাতৃগর্ভে থাকাকালীন শিশু থাকে এক ধরনের তরলের মধ্যে। তখন তার শ্বাস গ্রহণ থেকে শুরু করে অন্যান্য শারীরিক প্রক্রিয়াও ভিন্ন হয়। জন্মের পরপরই তাকে মানিয়ে নিতে হয় পৃথিবীর পরিবেশের সঙ্গে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে বলে সে সহজেই রোগাক্রান্তও হয়।
ঘুম
জন্মের পর প্রথম দুই সপ্তাহ শিশু খাবার খাওয়ার পরপরই ঘুমিয়ে পড়ে। শিশুকে নিয়মিত নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানোর অভ্যাস করাতে হবে। শিশু জন্মের পর সাধারণতপ্রতিদিন ১৬-১৭ ঘণ্টা ঘুমায়।
হিক্কা
শিশুদের হিক্কা বা হেঁচকি তোলা স্বাভাবিক।
হাঁচি
হাঁচি দিয়ে শিশু নাক পরিষ্কার রাখে।
কান্না
শিশু সাধারণত ক্ষুধা ও পিপাসা লাগলে এবং প্রস্রাব-পায়খানা করে ভিজলে ও ব্যথা পেলে কাঁদে। ক্ষুধার জন্যই শিশু কাঁদে-সব সময় এ রকম মনে করা ভুল। অনেক সময় অসুখ-বিসুখের কারণেও শিশু কাঁদতে পারে। তাই শিশু যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কাঁদে, তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। তবে শিশু অনেক সময় মাতৃস্পর্শ পাওয়ার জন্যও কাঁদে। এ ছাড়া অতিরিক্ত আদরে অনেক সময় শিশু ক্লান্ত হয়ে বিরক্তি প্রকাশের জন্য কাঁদে।
বমি
সাধারণত খাওয়ানোর পর শিশুর পেট থেকে বাতাস বের না করে তাকে শোয়ালে, পেটের ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি খাওয়ালে এবং হজমক্ষমতার তুলনায় বেশি ঘন খাবার দিলে শিশুরা বমি করে। দিনে এক-দুবার বমি করা স্বাভাবিক। তবে বমির সঙ্গে যদি পাতলা পায়খানাও হয় সে ক্ষেত্রে ডাক্তার দেখাতে হবে।
থ্রাস
দুধ খাওয়ার জন্য জিহ্বায় সাদা আস্তরণ পড়া স্বাভাবিক এবং তা সহজেই পরিষ্কার করা যায়। সাধারণত শিশুদের জিহ্বা, ঠোঁট ও গালের ভেতর এক ধরনের সাদা প্রলেপ পড়ে। পাতলা, নরম, পরিষ্কার কাপড় আঙুলে জড়িয়ে দইয়ের মতো সাদা প্রলেপ পরিষ্কার করতে হবে। যদি সাদা প্রলেপ পরিষ্কার হয়ে যায়, তাহলে বুঝতে হবে ওই প্রলেপ শিশুর ঢেকুর দিয়ে তোলা দুধের প্রলেপ। কিন্তু যদি সাদা প্রলেপ পরিষ্কার করা না যায়, তাহলে বুঝতে হবে ওই সাদা প্রলেপ এক ধরনের ছত্রাকজনিত সংক্রমণের জন্য ঘটেছে, যাকে থ্রাস বলে এবং এর জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন।
মলত্যাগ
জন্মের পর প্রথম দু-এক দিন শিশু সবুজাভ ও কালো আঠালো মলত্যাগ করে। তৃতীয়-চতুর্থ দিনে মলের রং হলুদ হয়ে যায়। তারপর যেসব শিশু মায়ের দুধ খায়, তাদের মলের রং হয় সোনালি হলুদ এবং তাতে কোনো গন্ধ থাকে না। বোতলে দুধ খাওয়া শিশুর মল প্রায়ই সাদাটে ও দুর্গন্ধযুক্ত হয়।
যেসব শিশু বুকের দুধ খায় সাধারণত সেসব শিশু ঘন ঘন মলত্যাগ করে। যেসব শিশু বোতলে দুধ খায় সাধারণত তাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়। যে শিশু বুকের দুধ খায় তার মল প্রথম কয়েক দিন ফেটে যাওয়া দইয়ের মতো পানিকাটা হতে পারে। এটা হওয়া স্বাভাবিক।
নবজাতকের মল যদি জলীয় এবং সবুজ হয় অথবা মলে আম বা রক্ত থাকে, তবে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
তেল মাখা
গোসলের আগে শিশুর গায়ে অলিভ অয়েল বা তেল মাখা যেতে পারে। বেবি লোশন, বেবি পাউডারও ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে গরমকালে বেশি তেল মাখলে ঘামাচি ও চর্মরোগ হওয়ার আশঙ্কাই বেশি।
ঢাকা শিশু হাসপাতাল, ঢাকা।
No comments:
Post a Comment
blogger